এমপক্স ভাইরাস কী? এটা কীভাবে ছড়ায়? এ রোগের লক্ষণগুলো কী?

এমপক্স ভাইরাস কী

এমপক্স: একটি নতুন জনস্বাস্থ্য সংকট

এমপক্স ভাইরাস কী | সম্প্রতি আফ্রিকার কিছু অংশে এমপক্সের প্রাদুর্ভাব আন্তর্জাতিক উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যার ফলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এটিকে জরুরি জনস্বাস্থ্য অবস্থা হিসেবে ঘোষণা করেছে। এই সংকটের কেন্দ্রস্থলে রয়েছে গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, যেখানে এই রোগে অন্তত ৪৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে।

Subscribe Now

এমপক্স ভাইরাস কী?

এমপক্স (Mpox), যা আগে মাঙ্কিপক্স নামে পরিচিত ছিল, একটি ভাইরাসজনিত রোগ যা পক্সভাইরাস গোত্রের অন্তর্ভুক্ত। যদিও এটি গুটিবসন্তের (Smallpox) সঙ্গে সম্পর্কিত, এমপক্স সাধারণত অনেক কম ক্ষতিকারক। তবে সম্প্রতি এই রোগটি দ্রুত সংক্রমণ ক্ষমতা দেখিয়েছে এবং এর কারণে বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ বেড়ে গেছে।

সংক্রমণের ইতিহাস

এমপক্স ভাইরাস কী এটা কীভাবে ছড়ায় | প্রথমে এমপক্স একটি জ়ুনোটিক রোগ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিল, যা প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে স্থানান্তরিত হয়। প্রাথমিকভাবে, আফ্রিকার বনাঞ্চলে বসবাসরত প্রাণী যেমন ইঁদুর, কাঠবিড়ালী এবং অন্যান্য ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী এই ভাইরাসের প্রধান বাহক ছিল। কিন্তু এখন এই ভাইরাসটি মানুষ থেকে মানুষেও সংক্রমিত হতে পারে।

লক্ষণ এবং উপসর্গ

এমপক্স ভাইরাস কী
এমপক্স ভাইরাস কী

এমপক্সে আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রাথমিকভাবে যে লক্ষণগুলো অনুভব করেন তা হল:

  • জ্বর: শরীরের তাপমাত্রা হঠাৎ করে বেড়ে যায়।
  • মাথাব্যথা: প্রচণ্ড মাথাব্যথা হয়।
  • ফোলা এবং ব্যথা: লসিকাগ্রন্থির (lymph nodes) ফোলা এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা অনুভূত হয়, বিশেষ করে পিঠে এবং পেশিতে।
  • ফুসকুড়ি: জ্বরের কয়েকদিন পর ফুসকুড়ি দেখা দেয়। সাধারণত মুখ থেকে শুরু হয়ে পরে তা শরীরের অন্যান্য অংশে, বিশেষ করে হাতের তালু এবং পায়ের তলায় ছড়িয়ে পড়ে।

এই ফুসকুড়িগুলো প্রথমে ছোট ছোট গুটি আকারে শুরু হয় এবং পরে তা বড় হয়ে ওঠে। ফুসকুড়িগুলো অত্যন্ত চুলকানো এবং ব্যথাদায়ক হতে পারে। সময়ের সাথে সাথে এগুলো শক্ত হয়ে স্ক্যাব বা গোল পুরু আস্তরে পরিণত হয়, যা শেষে পড়ে গিয়ে দাগ সৃষ্টি করতে পারে।

রোগের প্রাথমিক এবং গুরুতর পর্যায়

এমপক্স ভাইরাস কী

সংক্রমণের ১৪ থেকে ২১ দিনের মধ্যে এমপক্স নিজে নিজেই ঠিক হয়ে যেতে পারে। তবে কিছু ক্ষেত্রে, বিশেষ করে ছোট শিশুসহ ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীর মধ্যে, এটি অত্যন্ত মারাত্মক হতে পারে। গুরুতর আক্রমণের ক্ষেত্রে মুখ, চোখ, এবং যৌনাঙ্গসহ পুরো শরীরে গভীর ক্ষত তৈরি হতে পারে। এর ফলে দীর্ঘমেয়াদী শারীরিক সমস্যা এবং অঙ্গহানি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

জনস্বাস্থ্য সংকট এবং আন্তর্জাতিক উদ্বেগ

আফ্রিকায় এমপক্সের ক্রমবর্ধমান প্রাদুর্ভাবের কারণে ডব্লিউএইচও এটিকে জরুরি জনস্বাস্থ্য অবস্থা হিসেবে ঘোষণা করেছে। যদিও এটি অতীতের কিছু প্রাদুর্ভাবের তুলনায় কম মারাত্মক, তবুও এর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা এবং মৃত্যুর হার যথেষ্ট উদ্বেগজনক।

প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণ

এমপক্স প্রতিরোধের জন্য জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং ব্যক্তিগত সতর্কতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সংক্রমিত ব্যক্তিদের সঙ্গে সরাসরি সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা, হাত ধোয়ার মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং আক্রান্ত প্রাণীর সংস্পর্শে আসা থেকে বিরত থাকা এই রোগ প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে।

উপসংহার

এমপক্সের বর্তমান প্রাদুর্ভাব আন্তর্জাতিক জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটির মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং কার্যকর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ অপরিহার্য। বিশ্ব সম্প্রদায়কে একত্রিত হয়ে এই সংকট মোকাবিলা করতে হবে যাতে আরও প্রাণহানি এড়ানো যায় এবং রোগটি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ

facebook caption bangla

tiktok bio bangla

 

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *